বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ লোক গ্রামাঞ্চলে বাস করে এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের সংগে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশের মোট জিডিপির শতকরা ২০ ভাগ কৃষিখাত হতে অর্জিত হয় এবং সমগ্র শ্রমশক্তির ৪৮ শতাংশ কর্মসংস্থান এ খাতের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং জমির ফসল নিবিড়তা অধিকতর বৃদ্ধি পাওয়ায় গতানুগতিক চাষাবাদ পদ্ধতির মাধ্যমে বর্ধিত খাদ্য চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। কৃষক সমাজের সমৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র দূরীকরণ, গ্রামীন সম্প্রদায়ের টেকসই স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি এবং সম্পদের সুষ্ঠু ও সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং পরিকল্পিত সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে ১৯৭৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে কৃষি গবেষণা সমন্বয়, পরিকল্পনা, গবেষণার বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের জন্য সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্ত্তীতে জাতীয় পর্যায়ে কৃষি গবেষণার গুরুত্ব ও সাফল্য বিবেচনায় এ্যাক্টের আওতায় কার্যপরিধি অধিকতর বৃদ্ধি, সুসংহত ও জোরদার করে ১৯৯৬ সালে কাউন্সিলকে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব প্রদান পূর্বক “বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল আইন ১৯৯৬” পুনঃপ্রনয়ন করা হয়। এই আইনের আওতায় কৃষি খাতের অধীন শস্য, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য ও বন বিষয়ক উপখাতের সংগে সংশ্লিষ্ট দশটি জাতীয় গবেষণা ইনষ্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলকে নিয়ে জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম (NARS) পূনর্গঠিত হয়। গবেষণা ইনষ্টিটিউট ও সহযোগী সকল সংস্থাসমুহের গবেষণা ক্ষেত্রে দ্বৈততা পরিহার, কর্মসূচীর সমন্বয়, জাতীয় নীতিমালার ভিত্তিতে গবেষণা পরিকল্পনা প্রনয়ন ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ, গবেষণা মূল্যায়ণ, পরীবিক্ষণ, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং জাতীয় পর্যায়ে কৃষি গবেষণার মান উন্নয়ন ও দিক নির্দেশনা প্রদান কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য।
কৃষি গবেষণা সিস্টেম এর কার্যকর সমন্বয় সাধনে বিএআরসির ভূমিকা অধিকতর জোরদার করার লক্ষ্যে ২০১২ সালের ৮ মার্চ সংসদ কর্তৃক বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল আইন, ২০১২ অনুমোদন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল আইন ২০১২ কৃষি গবেষণা কর্মসূচী সমন্বয়কল্পে বিএআরসিকে গবেষণা সম্পদ বরাদ্দকরণে ক্ষমতা প্রদান করেছে।