Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৪ জুন ২০২৪

বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (২০২৩-২০৫০) এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃষির ফসল উপখাতে করণীয় শীর্ষক কর্মশালা


প্রকাশন তারিখ : 2024-06-24

২৮ মে ২০২৪ তারিখ রোজ বুধবার সকাল ০৯:৩০ ঘটিকায় Òবাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (২০২৩-২০৫০) এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃষির ফসল উপখাতে করণীয়বিষয়ক শীর্ষক কর্মশালা বিএআরসি’র মিলনায়তন, ফার্মগেট, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সন্মানিত নির্বাহী চেয়ারম্যান, মহোদয় . শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন . নুরুন নাহার চৌধুরী, সন্মানিত এনডিসি, মহোদয় অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়। কর্মশালায় স্বাগত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন . মোঃ বক্তীয়ার হোসেন, সদস্য পরিচালক, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বিএআরসি। এছাড়াও কর্মশালায় সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো: জিয়াউল হক, পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর। আরোও উপস্থিত ছিলেন দেশের বরেণ্য প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞ আলোচকবৃন্দ . মোঃ আইনুন নিশাত, এমিরিটাস প্রফেসর, ব্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও দলনেতা, বাংলাদেশ জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ২০২৩-২০৫০ প্রণয়ণ কনসর্টিয়াম এবং . মোঃ আবদুল মুঈদ, সাবেক মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট, সামিট, বাংলাদেশ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেমভুক্ত সংস্থাসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আগত বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাবৃন্দ । পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

স্বাগত বক্তব্যের শুরুতেই ড. মোঃ বক্তীয়ার হোসেন, সদস্য পরিচালক, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বিএআরসিতে আগত অতিথিবৃন্দ সকলকে ঘুর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঘটে যাওয়া বৃষ্টিস্নাত সকালের শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। অতঃপর তিনি উক্ত কর্মশালার কার্যক্রম ও শিল্পায়নের প্রভাবে বিশ্বের জলবায়ুর ক্রমাগত যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ বিশ্ব জলবায়ু ঝুঁকি সূচকে সপ্তম স্থানে রয়েছে তবে পরিবর্তিত এই জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাঁচতে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু প্রবর্তন প্রশমন ও অভিযোজন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এছাড়াও তিনি বলেন যে, সম্প্রতি ২০৩০-২০৫০ সালের জন্য ন্যাশনাল এডাপটেশন প্ল্যান (ন্যাপ) চালু করেছে। কনফারেন্স অফ পার্টিস (কপ)-১৫ এর পর বাংলাদেশ তার নিজস্ব সম্পদ দিয়ে ২০০৯ সালে একটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই তহবিলটি জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রেই এ পর্যন্ত ৮০০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। যা বাংলাদেশ সরকারের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ থেকে ৭ শতাংশ। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যের ২০২৩-২০৫০ সালের জন্য জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) প্রণয়ন, ১১৩টি অভিযোজনমূলক পরিকল্পনা, ৮টি সেক্টর, ১১টি অঞ্চল, জিডিপিতে কৃষি সেক্টরের অবদান (১৪%) ইত্যাদি বিষয় বিশদভাবে উপস্থাপন করেন। অভিযোজনমূলক ১২টি এ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত কর্মপরিকল্পনার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে সম্বলিতভাবে কাজ করার আহবান জানান এবং আয়োজনকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

অতঃপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন . মোঃ ছায়ফুল্লাহ, সদস্য পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ), বিএআরসি। উপস্থাপনার শুরুতেই তিনি জানান যে NASA এবং WMO এর গবেষণা অনুসারে পৃথিবীর তাপমাত্রা (১৯২০-২০১৯) গত ১০০ বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে গিয়েছে। এ বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো গ্রীনহাউজ গ্যাসের নির্গমন বৃদ্ধি। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার (০.০১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস/বছর), গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি এবং চলতি বছর ৩০ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪২.৮ ডিগ্রি  সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অনুযায়ী, ১২৯ টি দেশ তাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রক্রিয়া শুরু করছে, যার মধ্যে বাংলাদেশেও একটি। এছাড়াও তিনি বলেন যে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে লবণাক্ততা দেশের অভ্যন্তরে শরীয়তপুর পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার  বিস্তৃত হতে পারে, যা ফসলের উৎপাদনকে ব্যাহত করবে। তিনি অভিযোজন ও প্রশমন, বিভিন্ন ফসলের কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ, জলবায়ুর সংকটাপন্ন এলাকাসমূহ, চরমভাবাপন্নতা বৃদ্ধি, খরা, লবনাক্ততা, জলোচ্ছ্বাস, উচ্চ তাপপ্রবাহ, ভূমিধ্বস, নদী/উপকূলীয় ভাঙ্গন, বজ্রপাত, প্রবল বৃষ্টিপাত, শৈত্যপ্রবাহ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অভিযোজন পরিকল্পনার অগ্রাধিকারভূক্ত ৮টি খাত, জলবায়ুর ভবিষ্যৎ দৃশ্যপটসমূহ, যোগাযোগ অবকাঠামো সুরক্ষা, সক্ষমতা উন্নয়ন, গবেষণা, উদ্ভাবনের জন্য অভিযোজনে মোট বিনিয়োগ ব্যয় (১৫টি পদক্ষেপ), জলবায়ু সহিষ্ণু কৃষির ক্ষেত্রে এ্যাকশন রির্সাসের কর্মপরিধি বিশদভাবে উপস্থাপন করেন এবং উপস্থিত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।